ঢাকা , সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫ , ১৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চাঁদপুর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নাসিম আহমেদ টিটোর বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ, প্রকল্প অর্থ আত্মসাৎ অভিযোগ

প্রকৌশলী নাসিম আহমেদ চাঁদপুর গণপূর্তকে বানিয়েছেন ঘুষের আখড়া

আপলোড সময় : ২৯-০৬-২০২৫ ০৯:৪২:২৬ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ২৯-০৬-২০২৫ ০৯:৪২:২৬ অপরাহ্ন
প্রকৌশলী নাসিম আহমেদ চাঁদপুর গণপূর্তকে বানিয়েছেন ঘুষের আখড়া নির্বাহী প্রকৌশলী নাসিম আহমেদ
 

চাঁদপুর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নাসিম আহমেদ টিটোর বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ, প্রকল্প অর্থ আত্মসাৎ এবং সরকারি ক্ষমতার নগ্ন অপব্যবহারের ভয়াবহ অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। এসব অনিয়মের প্রেক্ষিতে ক্ষুব্ধ হয়ে চাঁদপুরের প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার ফেরদাউস মোর্শেদ জুয়েল গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগপত্রটি দাখিলের তারিখ ২০২৫ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি হলেও বিষয়টি সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসার পর তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

অভিযোগপত্রে নির্বাহী প্রকৌশলী নাসিম আহমেদ টিটোকে ‘ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ ও জঘন্য চরিত্রের অফিসার’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়, চাঁদপুরে যোগদানের অল্পদিন পরই তিনি ৫% হারে ঘুষ আদায়ের অপসংস্কৃতি চালু করেন। নির্দিষ্টভাবে হিসাব সহকারী আনোয়ার হোসেনকে ঘুষ আদায়ের দায়িত্ব দিয়ে, ঘুষ না দিলে কোনো বিলেই স্বাক্ষর না করার হুমকি দিয়ে ঠিকাদারদের কার্যত জিম্মি করে তোলেন।

ঘুষ বাণিজ্যের পাশাপাশি প্রকৌশলী টিটোর বিরুদ্ধে ২০ লাখ টাকার বেশি ভুয়া কোটেশন তৈরি করে প্রকল্প ছাড়াই অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও উঠেছে। চাঁদপুর সার্কিট হাউজের গেট সংস্কারের নামে ২৫ লাখ টাকার বরাদ্দ গ্রহণ করলেও, বাস্তবে কাজ হয়েছে মাত্র দুই থেকে তিন লাখ টাকার। এ ছাড়া সদর হাসপাতালে তার নামে ২২ লাখ টাকার কার্যক্রম চলমান রয়েছে, যার স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।

ঠিকাদার হাবিব নামের এক ভুক্তভোগী ভিডিও বক্তব্যে বলেন, “নাসিম আহমেদ টিটো বেপরোয়া। তার ঘুষের শিকার হয়ে আমরা লাভের চেয়ে ক্ষতির মুখ দেখি। সরকারি কর্মকর্তার ছায়ায় থেকে তিনি নিজেই ঠিকাদারি করেন। আগে ঘুষের টাকা আনোয়ার হোসেনকে দিয়ে তারপরই বিলের ছাড়পত্র মেলে।”

এমন অভিযোগে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন আরও অনেক ঠিকাদার। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, “টিটোর অধীনে কাজ করতে হলে প্রথম শর্তই ঘুষ—তা না দিলে কাজ বন্ধ, বিল আটকে যায়।”

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, গত বছরের ৫ আগস্টের কিছুদিন আগে এই প্রকৌশলী নিজেই অফিসের নিচতলায় বঙ্গবন্ধু কর্নার নির্মাণ করেন এবং নিজেই এর উদ্বোধন করেন, যা আদর্শগত শিষ্টাচার ভঙ্গের নজির। এরপর এখন দেখা যাচ্ছে তিনি রাজনৈতিক পরিচয় পাল্টে নিজেকে বিএনপি পরিবারের সদস্য দাবি করার প্রয়াস চালাচ্ছেন।

প্রশ্ন উঠছে—একজন সরকারি কর্মকর্তা কীভাবে প্রশাসনিক দায়িত্বে থেকে নিয়মিত ঘুষ আদায়, ভুয়া প্রকল্পে অর্থ আত্মসাৎ এবং রাজনৈতিক পরিচয় বদলে ফেলার মতো গর্হিত কাজ করতে পারেন, অথচ তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি?

চাঁদপুরবাসী ও সৎ ঠিকাদার মহল আজ একটাই প্রশ্ন রাখছে—এই দুর্নীতির দায়ভার কে নেবে? প্রশাসন কী এবারও নীরব দর্শকের ভূমিকায় থাকবে?


নিউজটি আপডেট করেছেন : News Upload

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ